কবিতাটি বিখ্যাত কবি নজরুল ইসলাম রচিত একটি অনন্যসাধারণ দেশপ্রেমমূলক কবিতা। এটি বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য রত্ন, যেখানে কবি জাতিকে সচেতন ও সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ১৯৪৭ সালের দেশভাগের প্রেক্ষাপটে লেখা এই কবিতাটি আজও সমান প্রাসঙ্গিক এবং জাতীয় সংকটে এটি আমাদের উজ্জীবিত করে।
কবিতার মূলভাব
'কান্ডারী হুশিয়ার' কবিতার মূলভাব হলো জাতীয় চেতনা, দায়িত্ববোধ এবং সংকটময় মুহূর্তে নেতৃত্বের ভূমিকা। কবি এখানে দেশকে একটি নৌকার সঙ্গে তুলনা করেছেন, আর নৌকার কান্ডারী হচ্ছেন সেই নেতা, যিনি জাতিকে সঠিক পথে পরিচালিত করবেন। যদি কান্ডারী সতর্ক না থাকেন, তবে পুরো জাতি দিকভ্রান্ত হয়ে পড়তে পারে। কবি জনগণকেও সতর্ক হতে বলেছেন, যেন তারা তাদের নেতাদের কার্যক্রম সম্পর্কে সচেতন থাকেন। এই কবিতা জাতীয় সংকটময় সময়ে এক দৃঢ় আহ্বান হিসেবে কাজ করে।
বিষয়বস্তু
১. দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবাদ: কবিতার প্রতিটি পঙক্তি দেশপ্রেমের শক্তিশালী বার্তা বহন করে। কবি দেশের মানুষের কাছে আবেদন করেছেন, তারা যেন নিজেদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সজাগ থাকেন।
নেতৃত্বের ভূমিকা: কবিতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো নেতৃত্ব। যদি নেতা সঠিক পথে না থাকেন, তবে জাতির পতন অবশ্যম্ভাবী। তাই কবি নেতা ও জনগণ—উভয়কেই সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।বিপদ ও সংকট মোকাবিলা: কবিতায় কবি সংকটকে সমুদ্রের ঝড়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন। এই সংকট মোকাবিলা করতে হলে সাহসী ও দৃঢ়চেতা নেতৃত্বের প্রয়োজন।
সচেতনতার ডাক: কবিতার শেষাংশে বারবার ‘হুশিয়ার’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে, যা একটি সতর্কীকরণ সংকেতের মতো। এর মাধ্যমে কবি জনগণকে সচেতন হতে আহ্বান জানিয়েছেন।
উপসংহার
‘কান্ডারী হুশিয়ার’ শুধুমাত্র একটি কবিতা নয়, এটি একটি জাতীয় আহ্বান। যখনই জাতি সংকটে পড়ে, তখন এই কবিতার প্রতিটি শব্দ শক্তি ও অনুপ্রেরণা দেয়। এটি আমাদের শেখায়, জাতির ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে হলে সঠিক নেতৃত্বের প্রয়োজন এবং সাধারণ জনগণকেও সচেতন হতে হবে। নজরুলের এই কবিতা আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক এবং আগামী দিনেও জাতিকে পথ দেখাবে।
আরও পড়ুনঃ নূরলদীনের সারাজীবন নাটকের পটভূমি, বিষয়বস্তু ও চরিত্র
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন